Freelancing Career Guideline | ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গাইডলাইন পার্ট-১ | (ফ্রিল্যান্সিং কি, কেন?)


ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গাইডলাইন পার্ট-১
(ফ্রিল্যান্সিং কি, কেন?)





ফ্রিল্যান্সিং কি?





ফ্রিল্যান্সিং মানে হলো মুক্ত পেশা বা ব্যবসায়।


কোন নির্দিষ্ট ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে, কোন নির্দিষ্ট টাইম, স্থান, ডেসকোড না মেনে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে বসে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাজ/সার্ভিস করে দেওয়াকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। (এমন কাজ/সার্ভিস যেটা অনলাইনে করা যায়) 



ডিকশনারি অনুযায়ীঃ

 

কোন একটি কোম্পানিতে/প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত হওয়ার পরিবর্তে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কোম্পানি/প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করা। বাড়িতে বসে কাজ করা, ইত্যাদি।




সহজ কথায়:


কোন ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠান/কোম্পানি/এজেন্সির যে কাজ/সার্ভিস সরাসরি কোন দোকানে/বাজারে/শহরে বসে করা যায়। আবার চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে বসে করা যায়। নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে বসে অনলাইনে সেই কাজ/সাভিস করে দেওয়াকে ফ্রিল্যান্সিং বলে।


যে কাজ করে তাকে ফ্রিল্যান্সার/সেলার বলে,

কাজ কে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং বলে,

যারা করায় তাদের কে বায়ার বলে।




ফ্রিল্যান্সিং কোন স্বপ্ন নয়, বরং কঠিন বাস্তবতা।

ফ্রিল্যান্সিং একটি সাধারণ পেশা বা ব্যবসায় ও বলা চলে (সাধারণ চাকুরী বা ব্যবসায় এর মতো)






ফ্রিল্যান্সিং কেন করে?


 



* বায়াররা কেন সরাসরি নিজের নিকটবর্তী দোকানে/বাজারে/শহরে কাজ না করিয়ে  ফ্রিল্যান্সার দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়?


অথবা,


* পৃথিবীতে এত পেশা থাকতে ফ্রিল্যান্সিং পেশা কেন এত জনপ্রিয় হলো?




এর পেছনে ৪ টি কারণ রয়েছে:


  1. সময় সাশ্রয়ের জন্য
  2. অর্থ সাশ্রয়ের জন্য
  3. অভিজ্ঞ ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠান/এজেন্সি দিয়ে কাজ করানোর জন্য
  4. সহজ লভ্যতার জন্য



এবার আসুন এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসি।



১/ সময় সাশ্রয়ের জন্য


ফ্রিল্যান্সিং পেশা অল্প সময়ে জন্য প্রিয় হওয়ার প্রথম কারণ, সময় সাশ্রয়।

ফ্রিল্যান্সারদের বেশিরভাগ বায়ার উন্নত দেশের ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠান/কোম্পানি/এজেন্সি গুলো।

কোন একটা কাজ/সার্ভিসের জন্য আমরা সাধারণত নিকটবর্তী দোকানে/বাজারে/শহরে যাই

তারপর ঘন্টার পর ঘন্টা সময় দিয়ে সে কাজ/সার্ভিস টা করিয়ে নিই।


কিন্তু উন্নত দেশের বায়ারদের হাতে তেমন সময় থাকে না।

তাই তারা ঘরে/অফিসে/প্রতিষ্ঠানে বসে

অথবা অবসর সময়ে অনলাইনে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম/সোসাল মিডিয়া/অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সার দিয়ে করিয়ে নেয়।


এতে বায়ারদের অনেক সময় সাশ্রয় হয়।






২/ অর্থ সাশ্রয়ের জন্য


বায়ারদের কাছে ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম গুলো এত জনপ্রিয় হওয়ার ২য় কারণ, অর্থ সাশ্রয়।

আগেই বলেছি ফ্রিল্যান্সারদের বায়ার বেশিরভাগ উন্নত দেশের ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠান/কোম্পানি/এজেন্সি গুলো গুলো।


আর উন্নত দেশের নাগরিকদের জীবন যাত্রার মানও অনেক উন্নত।

তাই তাদের কে আয় ও করতে হয় বেশি এবং ব্যয় করতে হয় হিসেব করে বা বেশি।

তাই কোন কাজ/সার্ভিস সেই দেশের কোন ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠান/কোম্পানি/এজেন্সি দিয়ে সরাসরি  করাতে চাইলে অনেক বেশি ব্যয় হয়।


আবার ফ্রিল্যান্সিং প্লার্টফর্ম গুলোতে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার/সেলার আমাদের মতো মধ্যম আয়ের দেশ ও স্বল্পোন্নত দেশের ব্যাক্তি/এজেন্সি গুলো।

তাই বায়াররা একই কাজ/সার্ভিস বেশি চার্জ দিয়ে নিজ দেশের ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠান/এজেন্সি গুলো দিয়ে না করিয়ে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম ব্যবহার করে আমাদের মতো মধ্যম আয়ের দেশ বা স্বল্পোন্নত দেশের ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে করিয়ে নেয়।

এতে অনেক বেশি অর্থের সাশ্রয় হয়।


অন্যদিকে আমাদের কাছে এসে উন্নত দেশের কারেন্সি গুলো কনভার্ট/এক্সচেঞ্জ হয়ে ভালো একটা পরিমাণ হয়ে যায়।

তাই আমাদের পক্ষেও অল্প পরিমাণ অর্থ হলেও আমাদের পুষিয়ে যায়।







৩/ অভিজ্ঞ ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠান/এজেন্সি দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য


বায়ারদের কাছে ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম গুলো দিন দিন জনপ্রিয় হওয়ার ৩য় কারণ, অভিজ্ঞ ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠান/এজেন্সি দিয়ে সহজেই কাজ করানো যায়।


শুধু যে উন্নত দেশেরই বায়াররা যে সবসময় ফ্রিল্যান্সিং/আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সার দিয়ে কাজ করায় ব্যপার টা এমন নয়। অনুন্নত, স্বল্পোন্নত বা মধ্যম আয়ের দেশ /উন্নয়নশীল দেশের বায়াররা ফ্রিল্যান্সার দিয়ে কাজ করিয়ে থাকে।

কারণ অনেক সময় কোন কাজ/সার্ভিসের জন্য নিকটবর্তী দোকানে/বাজারে/শহরে অভিজ্ঞ লোক পাওয়া যায় না তাই অভিজ্ঞ লোকের অভাবে বাধ্য হয়েই বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সার দিয়ে করাতে হয়।


আর উন্নত দেশের বায়াররা তো আছেই, কেননা তাদের কাজ ও একেবারে লো-কোয়ালিটির হলে হয়না। খুব এক্সপার্ট লোক ছাড়া তাদের কাজ/সার্ভিস/ গুলোতে পরিপূর্ণতা আসে না।


আর ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর মুলত তাদের জন্য যাদের কোন একটা বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আছে বা সেই বিষয়ে যথেষ্ট এক্সপার্ট।

কিন্তু সে কোন একটা নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আন্ডারে চাকুরী করতে চাচ্ছে না।

বরং,ফিল্যান্সিং প্লার্টফর্ম/সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিজের স্বাধীন মতো সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠানের জন্য সেই কাজ/সার্ভিস টি দেওয়া ও অতিরিক্ত আয় করা।






৪/ সহজ লভ্যতার জন্য


ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর/ পেশা টি বায়ার ও ফ্রিল্যান্সারদের নিকট সমানভাবে দিন দিন জনপ্রিয় হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ সহজ লভ্যতা।


বায়াররা চাইলে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম ব্যবহার করে শুধু কয়েকটা ক্লিক করার মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের অভিজ্ঞ ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠান/এজেন্সি দিয়ে যে কোন কাজ/সার্ভিস করিয়ে নিতে পারে। ব্যপারটা খুবই সহজ।


অন্যদিগে ফ্রিল্যান্সাররা চাইলে নিজের স্বাধীন মতো নিজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম ব্যবহার করে শুধু একটি প্রোফাইল খুলে ও নিজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কীত বিবরনী ও ডোমো কাজের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে বসে অপর প্রান্তের সেই কাজ/সার্ভিস টি করে অর্থ উপার্জন করতে পারে।

এটাও অনেকটা সহজেই বলা যায়।


ধারণা করা হয় এ জন্যই ফ্রিল্যান্সিং পেশা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ও ছড়িয়ে পরছে।






এতটুকু পড়রার পর নিশ্চয় আপনার ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বেসিক ধারণা হয়েছে।

আর ফ্রিল্যান্সিং যেহেতু শুধু দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার খেলা, তাই আগামী পর্বে জানতে পারবেন কি কি প্রফেশনাল স্কিল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় এব কিভাবে করে।




বিঃদ্রঃ

আমাদের দেশের কিছু অসাধু তাবিজ (কোর্স) বিক্রেতা ও কিছু অর্থলোভী অসাধু সাংবাদিকেরা সামান্য কয়টা টাকার জন্য সেই তাবিজ (কোর্স) বিক্রেতার দালালি করতে গিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কে অনেক রং মাখিয়ে ভুলভাবে উপস্থাপন করে।


এতে নতুন যারা এ সেক্টরে আসতে চায় তারা অনেক ভুল ধারণা নিয়ে সেই তাবিজ (কোর্স) বিক্রেতার খপ্পরে পরে সর্বস্ব হারিয়ে সর্বশেষ ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরকে গালি দিয়ে চলে যায়। 

নতুনদের কে সতর্ক করার জন্য ও সঠিক তথ্য দেওয়ার জন্যই আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।

তাই শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ দিন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ